গাইবান্ধায় ৫ম ও ৮ম শ্রেণির দুই ছাত্রীর বিয়ে সম্পন্ন ।
মোনায়েম মন্ডল
গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউপি মেম্বার মিন্টু মিয়ার উপস্থিতিতে ফারাজী পাড়ায় ৫ম ও ৮ম শ্রেণির ২ ছাত্রীর বিয়ে সম্পন্নের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের কয়া ছয়ঘরিয়া গ্ৰামের জনৈক নাবালিকা ৫ম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে খোলাহাটি ইউনিয়নের ফারাজীপাড়ার আব্দুল আজিজ এর নাবালক পুত্র শাহজাহান এর পারিবারিক ভাবে বৈঠকের মাধ্যমে বিয়ে ঠিক করে। কিন্তু বর-কণে নাবালক-নাবালিকা হওয়ায় কণের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে সাহস না পাওয়ায় তারা উভয় পক্ষই খোলাহাটি ইউপি মেম্বার মিন্টু মিয়ার স্মরণাপন্ন হলে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ সহ সকল ঝুট ঝামেলা মেটানোর দ্বায়িত্ব নেন। পরে গত ৩ জুলাই/২০২০ ইং শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে উল্লেখিত নাবালিকা মেয়েকে বরের বাড়িতে এনে মিন্টু মেম্বার নিজে উপস্থিত থেকে জনৈক বিবাহ রেজিস্ট্রারের সহকারী মিলন মিয়া নামের ব্যক্তিকে দিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে পড়ানো হয়। শুধু তাই নয়, মিন্টু মেম্বার নিজের কৃতিত্ব জাহির করতে একই রাতেই ফারাজিপাড়া গ্ৰামের মিলন মিয়া নামের জনৈক ব্যক্তির কন্যা ও গাইবান্ধা আসাদুজ্জামান বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীর সাথেও গাইবান্ধা পৌর শহরের কুটিপাড়ার জনৈক ব্যক্তির নাবালক ছেলের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। এই বিয়েতেও মিন্টু মেম্বার উপস্থিত থেকে খোলাহাটি ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্ট্রার শামসুল ইসলাম এর মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে পড়ানো হয়।
এ বিষয়ে বিবাহ রেজিস্ট্রার শামসুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বিয়ে রেজিস্ট্রির কথা অস্বীকার করেন বটে পরে নিজেই প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানান। বিবাহ রেজিস্ট্রারের সহকারী মিলন মিয়ার মোবাইলে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করা হলে তিনি রহস্য জনক কারণে মোবাইল রিসিভ করেননি।
নির্ভরশীল সুত্র জানায়, ইউপি মেম্বার মিন্টু মিয়া উল্লেখিত নাবালক ছেলে মেয়ের বিয়ের আগে তাদের বয়স বেশি দেখিয়ে প্রত্যেকের নুতন করে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য সহযোগিতা করেছে বলে জানা গেছে।
মজার ব্যাপার হলো- উল্লেখিত দূর্নীতি পরায়ন বিবাহ রেজিস্ট্রাররা ঝামেলায় পড়ার ভয়ে এই ধরনের বাল্য বিয়েতে তাৎক্ষণিক ভাবে কাউকেই কাবিননামার অনুলিপি প্রদান করেন না। শুধু তাই নয়, বিবাহ রেজিস্ট্রাররা সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকেন যে, উল্লেখিত নাবালক ছেলে মেয়ের মূল বয়স সরকারি হিসেবে পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অনুলিপি প্রদান করেন না!
নির্ভরশীল আরেকটি সুত্র জানায়, উল্লেখিত ইউপি মেম্বার মিন্টু মিয়া শুধু মাত্র এই বাল্য বিয়ের সাথেই জড়িত নয়- তিনি ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ৪০ দিনের কর্মসূচি, সরকারের ঈদ উপহার আড়াই হাজার টাকার তালিকা তৈরিতেও ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এলাকার সচেতন জনগণ মতামতে জানান, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সরেজমিনে তদন্ত করলে বাল্য বিয়ে বন্ধ সহ তার দূর্নীতির নাতিদীর্ঘ খতিয়ান বেড়িয়ে আসবে।